আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি বঙ্গবন্ধুর মায়ের একটি কমপ্লিট ব্লগ। আমরা অনেকেই বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানলেও তার মায়ের সম্পর্কে তেমন একটা জানি না। বঙ্গবন্ধুর মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব একজন সাহসী, শক্তিশালী এবং অনুপ্রেরণাদায়ী মহিলা ছিলেন। তিনি তার স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তাকে দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে সমর্থন করেছিলেন। তার নিজের জীবনও অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল। এই ব্লগ পোস্টে, আমি বঙ্গবন্ধুর মায়ের জীবনের কিছু অজানা দিক তুলে ধরব। আমি তার শৈশব, শিক্ষা, বিবাহিত জীবন এবং মৃত্যু সম্পর্কেও আলোচনা করব।
বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম
ছিল শেখ লুৎফর রহমান ও মাতার নাম ছিল শেখ সায়েরা খাতুন। 1952 সালে যখন বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলন শুরু হয়, তখন শেখ মুজিবুর রহমান এই আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন। তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং কারাগারে থাকার সময় তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গে রচনা করা তাঁর আত্মজীবনী ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ লিখেছিলেন। তাঁর মায়ের মৃত্যুর পর, শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর মায়ের স্মরণে “শেখ সায়েরা খাতুন ট্রাস্ট” নামে একটি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই ট্রাস্টটি দেশের গরীব ও অসহায় মানুষদের সহায়তা করার জন্য কাজ করে।
আমরা সকলেই শেখ সায়েরা খাতুনের কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্বকে জন্ম দিয়েছিলেন যিনি আমাদের দেশকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং আমাদের একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। আমরা তার সাহস ও ত্যাগের জন্য তাকে সবসময় মনে রাখব।
বঙ্গবন্ধুর মাতার আদি নিবাস
আমার নাম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। আমি জন্মেছিলাম তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। আমার পিতার নাম আবদুল মিয়া এবং মাতার নাম রহিমা বেগম।
বঙ্গবন্ধুর মাতার শিক্ষাজীবন
শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জননী, তিনি একজন স্ব-শিক্ষিত নারী ছিলেন যিনি তার জীবনজুড়ে অদম্য মনোবল ও শিক্ষার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন। যদিও আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ অল্পই পেয়েছিলেন, কিন্তু তার জিজ্ঞাসু মন তাকে অনেক কিছু শেখার অনুপ্রাণিত করেছিল।
তিনি কুরআন ও হাদিস অধ্যয়ন করে ইসলামি জ্ঞান অর্জন করেছিলেন এবং ধর্মীয় গ্রন্থাবলি পাঠ করে আরবি ভাষার প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করেছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্য এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও বিস্তৃত জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মায়ের শিক্ষাগত অর্জন তার মেধা ও জ্ঞান অন্বেষণের প্রতিফলন এবং তিনি তার შিক্ষার প্রতি তার আগ্রহকে কখনোই হারাননি। তার শিক্ষা জীবনের মাধ্যমে, তিনি পড়ার গুরুত্ব এবং সীমাহীন শিক্ষার সুযোগের মূল্য শিখিয়ে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর মাতার বিবাহিত জীবন
বঙ্গবন্ধুর মায়ের নাম ছিল ফজিলাতুন্নেসা। তিনি মোজাম্মেল হকের কন্যা। তিনি বরিশাল জেলার করেরহাটে বর্তমান মোজাম্মেল হক লেনের বাসিন্দা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মা ছিলেন একজন ধার্মিক, আন্তরিক ও উদার মহিলা। তিনি নিজের সন্তানদের পাশাপাশি এলাকার সব শিশুদের প্রতি দরদি ছিলেন। তিনি সবসময় সবাইকে ভালোবাসতেন এবং সাহায্য করতেন। তিনি নিজে পড়ালেখা ভালো না করলেও সন্তানদের পড়ালেখার প্রতি অনেক মনোযোগ দিতেন। বঙ্গবন্ধুর মা তার দুই ছেলে এবং চার মেয়েকে নিয়ে খুব সুখী একটা সংসার করেছিলেন। তার স্বামী শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন একজন আইনজীবী। তিনি একজন সৎ এবং কর্তব্যপরায়ণ মানুষ ছিলেন। ১৯৩০ সালে তিনি মারা যান। এরপর বঙ্গবন্ধুর মা তার সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে সংসার চালান। তিনি নিজে সिलाই-বুনন করে সংসারের খরচ জোগাড় করতেন। তিনি খুব পরিশ্রমী ছিলেন এবং কখনো হাল ছাড়তেন না। তিনি তার সন্তানদেরকেও শিখিয়েছিলেন কখনো হাল না ছাড়ার। বঙ্গবন্ধুর মা ছিলেন একজন অসাধারণ মহিলা। তিনি তার সন্তানদের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। তার সন্তানরাও তার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অনুভব করত। বঙ্গবন্ধুর মা ফজিলাতুন্নেসার জীবন আমাদের সবার জন্য একটি অনুপ্রেরণা। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন যে, যত কঠিন পরিস্থিতিই আসুক না কেন, আমাদের কখনো হাল ছাড়া উচিত নয়।
বঙ্গবন্ধুর মাতার মৃত্যু
বঙ্গবন্ধুর মায়ের নাম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিনি ষষ্ঠ জানুয়ারি, ১৯০৩ সালে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার মির্জাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ আব্দুল মজিদ এবং মাতার নাম সরিফা খাতুন। ফজিলাতুন্নেছার দুই ভাই এবং দুই বোন ছিল। তিনি গোপালগঞ্জের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেন।
১৯২৬ সালের ১৮ মে, ফজিলাতুন্নেছা শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরে তিন পুত্র এবং দুই কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন ফজিলাতুন্নেছার চাচাতো ভাই। ফজিলাতুন্নেছা একজন সাহসী এবং মনোবলী নারী ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় তার স্বামী এবং পুত্রদের জন্য চিন্তিত থাকলেও অবিচল থাকেন। তিনি ১৯ আগস্ট, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার বাসভবনে নিহত হন।