শৈশব থেকেই আমরা শুনে আসছি বীরত্বের গল্প। রামায়ণের রাম, মহাভারতের অর্জুন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা। বীরত্ব মানুষের অন্তরে এক অদম্য সাহস এবং দেশপ্রেমের নিদর্শন। আমাদের দেশে সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান হচ্ছে বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীক। এই তিনটি সম্মানই প্রদান করা হয় সাহসী সেনা সদস্যদের, যারা তাদের কর্তব্য পালনের সময় অসাধারণ বীরত্ব প্রদর্শন করেছেন। এই বীরত্বের স্বীকৃতি এবং সম্মান প্রদর্শন করে আমাদের দেশ তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এই প্রবন্ধে, আমরা আলোচনা করব এই তিনটি সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানের বিষয়ে, তাদের প্রাপকদের সংখ্যা এবং বীরত্বের স্বীকৃতির গুরুত্ব সম্পর্কে।
বীরত্বের প্রতীক: বীর উত্তম, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান হলো বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীক। এই সম্মান অর্জন করেছেন এমন ব্যক্তিদের সংখ্যা খুবই সীমিত। বীর উত্তম সম্মান পেয়েছেন মোট ৭ জন, বীর বিক্রম পেয়েছেন মোট ১১ জন এবং বীর প্রতীক পেয়েছেন মোট ১৬৫ জন।
এই সম্মানগুলি শুধুমাত্র যুদ্ধে অসাধারণ সাহস এবং বীরত্ব প্রদর্শন করা ব্যক্তিদেরকেই দেওয়া হয়। যুদ্ধের সময় শত্রুর মুখোমুখি হয়ে অসাধারণ বীরত্ব এবং আত্মত্যাগের সঙ্গে যুদ্ধ করা, শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করা বা শত্রুর দখল থেকে নিজের অবস্থান রক্ষা করার মতো কাজের জন্য এই সম্মানগুলি দেওয়া হয়।
বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীক সম্মানগুলি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান। এই সম্মানগুলি এমন ব্যক্তিদেরকে দেওয়া হয় যারা যুদ্ধে অসাধারণ সাহস এবং বীরত্ব প্রদর্শন করেছেন। এই সম্মানগুলি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বীরদের স্মরণ করিয়ে দেয় এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সাহস এবং আত্মত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়।
বীর উত্তমদের সংখ্যা কত?
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা হলো বীর উত্তম। এই সম্মাননা প্রদান করা হয় দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসাধারণ সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক এ পর্যন্ত মোট ৭ জনকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন:
১। ক্যাপ্টেন (অব.) মতিউর রহমান
২। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মোহাম্মদ খালেদ
৩। স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) শামসুল আলম
৪। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (অব.) আবদুল করিম
৫। মেজর (অব.) নুরুল ইসলাম
৬। ক্যাপ্টেন (অব.) হানিফ উদ্দিন আহমেদ
৭। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) আবদুল হামিদ খান
বীর বিক্রমদের সংখ্যা কত?
বীরত্বের ইতিহাসে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ সম্মাননা প্রদান করে তিনটি মেডেল। সেগুলো হলো – বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীক। এ তিনটি মেডেলই প্রদান করা হয় অসাধারণ সাহসিকতার জন্য। বীর উত্তম মেডেলটি সর্বোচ্চ সম্মাননা, যা এ পর্যন্ত মাত্র ৭ জন সেনা সদস্য পেয়েছেন। বীর বিক্রম মেডেল পেয়েছেন ১১৭ জন এবং বীর প্রতীক মেডেল পেয়েছেন ৬৭০ জন। এই মেডেলপ্রাপ্ত বীর সেনাদের গল্প শুধু সাহসিকতারই কাহিনী নয়, এগুলো আমাদের জাতীয় ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। তাদের অসাধারণ ত্যাগ, সাহস এবং দেশপ্রেমের গল্প আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করে।
বীর প্রতীকদের সংখ্যা কত?
বীরত্বের সর্বোচ্চ সম্মান হলো বীরশ্রেষ্ঠ, যা মরণোত্তর দেওয়া হয়। এর পরেই আসে বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীক পদক। মুক্তিযুদ্ধে দুজন বীরশ্রেষ্ঠ ছাড়াও ১৬ জন বীর উত্তম, ৭৫ জন বীর বিক্রম এবং ৮৩১ জন বীর প্রতীক পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এইসব বীর মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বের কথা শুনলে শিউড়ে উঠতে হয়। যেকোনো জাতির জন্যই এতগুলো বীরত্বের পদক এক বিরল ঘটনা। বাংলাদেশের মানুষ সৌভাগ্যবান যে, এতগুলো বীর তাদের ছিল। তাদের সবাইকে অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই।
বীরত্বের স্বীকৃতি ও সম্মান
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান হলো বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীক। এই সম্মানগুলো যুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব ও সাহস প্রদর্শনের জন্য প্রদান করা হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মাত্র সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে বীর উত্তম উপাধি দেওয়া হয়। তারা হলেন – মেজর রফিকুল ইসলাম, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর মিজানুর রহমান খান (বীরত্বপুরস্কার প্রাপ্ত একমাত্র নৌ-সেনা কর্মকর্তা), মেজর এম এ মঞ্জুর, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুল মজিদ এবং ক্যাপ্টেন হামিদুর রহমান।
বীর বিক্রম উপাধিপ্রাপ্তদের সংখ্যা বেশি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ৭৭ জন মুক্তিযোদ্ধাকে এই উপাধি দেওয়া হয়। আর বীর প্রতীক উপাধি পেয়েছেন মোট ৩৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা।
উপসংহার: বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান হলো বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীক। এই সম্মানগুলো যুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব ও সাহস প্রদর্শনের জন্য প্রদান করা হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মাত্র সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে বীর উত্তম উপাধি দেওয়া হয়। তারা হলেন – মেজর রফিকুল ইসলাম, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর মিজানুর রহমান খান (বীরত্বপুরস্কার প্রাপ্ত একমাত্র নৌ-সেনা কর্মকর্তা), মেজর এম এ মঞ্জুর, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুল মজিদ এবং ক্যাপ্টেন হামিদুর রহমান।
বীর বিক্রম উপাধিপ্রাপ্তদের সংখ্যা বেশি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ৭৭ জন মুক্তিযোদ্ধাকে এই উপাধি দেওয়া হয়। আর বীর প্রতীক উপাধি পেয়েছেন মোট ৩৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা।